এ্যাসাইনমেন্ট/নির্ধারিতকাজ
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন:
১. ইসলামের সাথে ইমানের সম্পর্ক খুবই নিবিড়” কথাটি
ব্যাখ্যা কর।
২. কপটতার নিদর্শন গুলো কী কী?
৩. নবি-রাসুলের পার্থক্য বর্ণনা কর।
৪. হাশরের ময়দানে কয় ধরণের শাফায়াত কার্যকর হবে?
ব্যাখ্যা কর।
Answers
- 1. ইসলাম ও ঈমান এই দুটি শব্দ একে অপরের সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। ইসলামের মূল বিষয় গুলোর প্রতি বিশ্বাসকেই ঈমান বলা হয়। ঈমান শব্দের অর্থ হল বিশ্বাস। অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা, নবি-রাসুল, ফেরেশতা, আখিরাত তাকদির, এমন প্রতিটই বিষয়ের উপর মনে প্রানে বিশ্বাস আনাকেই ঈমান বলে। একজন মুসলিম হতে হলে সবার আগে ইসলামের প্রতিটি বিষয়ের উপর বিশ্বাস করতে হবে। অর্থাৎ ঈমান আনতে হবে।
ঈমানের তিনটি ধাপ রয়েছে।
ক অন্তরে বিশ্বাস করা
মুখে স্বীকার করা
গ তদানুসারে আমল করা।
মুলত ইসলামের যাবতীয় বিষয়ের উপর আন্তরিক বিশ্বাস, মৌখিক স্বীকৃতি এবং তদানুযায়ী আমল করার নামই হল ঈমান। কাজেই আমরা বলতে পারি ইসলাম ও ঈমানের সম্পর্ক অতি নিবিড়।
- 2.কপটতা মানে হলো ভণ্ডামি, দ্বিমুখী নীতি, প্রতারনা করা। ইসলামি পরিভাষায় একে বলা হয় "নিফাক" আর যে ব্যক্তি নিফাক করে তাকে বলা হয় মুনাফিক।
কপটতার নিদর্শন গুলো নিচে তুলে ধরা হলো:
১. যখন কথা বলে তখন মিথ্যা কথা বলে
২. ওয়াদা করলে ভঙ্গ করে
৩. আমানত রাখলে তার খিয়ানত করে এবং
৪. ঝগড়া করলে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে।
৫. নিজেদেরকে মুসলমান বলে দাবি করে কিন্তু গোপনে ইসলামকে অস্বীকার করে।
৬. কপটতারকারী সামাজিক ও পার্থিব লাভের আশায় মত্ত থাকে।
- 3. নবী রাসুলের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে
১. আল্লাহ তা আলা প্রেরিত যেসব পয়গম্বরদের উপর নতুন বিধি-বিধান অথবা আসমানী কিতাব নাযিল হয়েছে তাদেরকে রসূল বলে। অন্যদিকে যেসব পয়গম্বরগণ অন্য অন্য পয়গম্বর এর উপর নাযিলকৃত বাণী অথবা বিধি-বিধান প্রচার করতেন তাদেরকে নবী বলে।
২. প্রত্যেক রাসূল নবী কিন্তু প্রত্যেক নবী রসূল না।
৩. নবীর সংখ্যা তুলনামূলক অনেক বেশি অন্যদিকে রাসূলের সংখ্যা তেমন বেশি না তবে কোরআন মাজিদে মোট 25 জন নবী রাসূলের নাম উল্লেখ রয়েছে।
- 4.কিয়ামতের পরের ধাপটি হল হাশর। সেদিন পৃথিবী সৃষ্টি থেকে শুরু করে ধ্বংস হওয়ার পর্যন্ত সমস্ত মানুষকে জমায়েত করা হবে। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে-
"সেদিন পরিবর্তিত করা হবে এ পৃথিবীকে অন্য
পৃথিবীতে এবং পরিবর্তিত করা হবে আসমান
সমূহকে এবং লােকেরা পরাক্রমশালী এক
আল্লাহর সামনে হাজির হবে"। (সুরা ইবরাহিম : ৪৮)।
হাশরের কার্যাবলী হবে সূক্ষ আর শাফায়াত হলাে এরই একটি অংশ। হাশরের ময়দানে আল্লহার হুমুক ব্যতীত কেউ কথা বলার সাহস পাবে না। মূলত দুটি কারণে শাফায়াত করে হবে। যথা:
১. পাপীদের ক্ষমা করা বা পাপ মার্জনা করার জন্য।
২. পুণ্যবানদের মর্যাদা বৃদ্ধি ও কল্যাণ লাভের জন্য।
আর শাফায়াত দুই ধরনের। যথা:
|১. শাফায়াতে কুবরা: শাফায়াতে কুবরা হলো সর্বশ্রেষ্ঠ শাফায়াত। শাফায়াতে কুবরা মূলত হিসাব কার্য শুরু করার শাফায়াত। কারণ হাশরের সময়টা এতাে কষ্টদায়ক ভবে যে, সূর্যের প্রচন্ড তাপে কারও হাঁটু, কারাে কোমড় কারাে বা বুক পানিতে ডুবে যাবে তাদের শরীরের ঘামে। মানুষ অসহনীয় দুঃখ-কষ্টে নিপতিত থাকবে তখন হযরত আদম (আ.), হযরত নুহ (আ.), হযরত মুসা (আ.) প্রভৃতি নবিদের নিকট উপস্থিত হয়ে শাফায়াতের অনুরাধ করবে। তারা সকলেই অপারগতা প্রকাশ করবে। এসময় সবাই
মহানবী (স.) এর নিকট উপস্থিত হবে। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রশংসা ও তার মর্যাদা বর্ণনা করবেন। তারপর তিনি তার রবের নিকট সুপারিশ করার অনুমতি চাইবেন। আল্লাহ তা'আলা তাকে অনুমতি দিবেন। এরপর রাসূলুল্লাহ (স.) (তাদের জন্য) সুপারিশ করবেন। সাজদাহ করবেন এবং আল্লাহর মহানবী (স.) এর অনেক হাদিসে শাফায়াত করার কথা বলেছেন।
তিনি বলেছেন, "আমাকে শাফায়াত (করার
অধিকার) দেওয়া হয়েছে"। (সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম)
২. শাফায়াতে সুগরা: কিয়ামতের দিন পাপীদের ক্ষমা ও পুণ্যবানদের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য শাফায়াত করা হবে। এটাই শাফায়াতে সুগরা। নবি-রাসুল, ফেরেশতা, শহিদ, আলিম, হাফেজ এ শাফায়াতের সুযােগ পাবে। কুরআন ও সিয়াম (রাজা) শাফায়াত করবে বলেও হাদিসে উল্লেখ আছে। আমরা শাফায়াতের উপর বিশ্বাস স্থাপন করবোে এবং রাসূলুল্লাহ (স.) এর দেখানো পথে চলবাে ফলে পরকালে রাসূলুল্লাহ (স.) এর শাফায়াত যেন আমরা পাই সেই দোয়া বেশি বেশি করবাে।