Geography, asked by debnathmondal1011980, 2 months ago

অতিরিক্ত ভৌম জল উত্তোলনের প্রভাব গুলি বর্ণনা করো।


Answers

Answered by DEBOBROTABHATTACHARY
19

◆ ভূপৃষ্ঠের নিচে এবং ভূ অভ্যন্তরে অপ্রবেশ্য শিলা দ্বারা গঠিত স্তরের উপর মৃত্তিকা ও প্রবেশ্য শিলা রন্ধের স্থানগুলিতে যে জল সঞ্চিত থাকে, তাকে ভৌমজল বলা হয়।

• এই ভৌমজল সমগ্র বিশ্বের ব্যবহারযোগ্য বিশুদ্ধ জলের প্রধান উৎস। কিন্তু এই ভৌমজলের ভাণ্ডার সীমিত। বর্তমানে কৃষি, শিল্প ও গৃহস্থালির কাজে এই ভৌমজল প্রচুর পরিমাণে উত্তোলন করে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে বিভিন্ন ধরনের কুপ্রভাব সৃষ্টি হচ্ছে।

●নিম্নে অতিরিক্ত ভৌমজল উত্তোলনের প্রভাবগুলি আলোচনা করা হলো-

১)ভৌম জলতল হ্রাস-

অত্যধিক হারে ভৌমজল উত্তোলনের ফলে ভূগর্ভের ভৌম জলতল অনেক নিচে নেমে যায়। ফলে নিয়মিতভাবে কূপ ও নলকূপের সাহায্যে ভৌমজল আহরণ বাধাপ্রাপ্ত হয়।

২)ভূ-পৃষ্ঠীয় জলের পরিমাণ হ্রাস-

অত্যধিক হারে ভৌমজল উত্তোলনের ফলে ভূ-পৃষ্ঠীয় নদনদী, হ্রদ ও অন্যান্য জলাশয়ের জল চুইয়ে ভূ-অভ্যন্তরে চলে যায়। ফলে ভূ-পৃষ্ঠীয় জলের পরিমাণ হ্রাস পায়।

৩)ভূমিধস সৃষ্টি-

অতিরিক্ত পরিমাণে ভৌমজল উত্তোলনের ফলে ভূ-অভ্যন্তরের বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে ভৌম গহবর সৃষ্টি হয়।এর ফলে শিলাস্তরের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় এবং ভূমিধস সৃষ্টি হয়।

৪)ভূমিকম্পের প্রবণতা বৃদ্ধি-

অতিরিক্ত পরিমাণে ভৌমজল উত্তোলনের ফলে ভূ-অভ্যন্তরের বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে যে ভৌম গহবর সৃষ্টি হয়, তা শিলাস্তরের ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়। ফলে ভূমিকম্পের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।

৫)মৃত্তিকার লবনতা বৃদ্ধি-

অত্যধিক হারে ভৌমজল উত্তোলনের দ্বারা জমিতে জলসেচ করা হলে ওই ভৌম জলের মাধ্যমে উঠে আসা ভূ-অভ্যন্তরস্থ লবণ কৃষি জমিতে সঞ্চিত হয়। ফলে কৃষি জমির মৃত্তিকার লবণের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং জমি অনুর্বর হয়ে পড়ে।

৬)আর্সেনিক দূষণ-

অতিরিক্ত পরিমাণে ভৌমজল উত্তোলনের ফলে ভূগর্ভে যে শূন্যস্থান সৃষ্টি হয়,তা বায়ু দ্বারা পূর্ণ হয়ে যায়। এরপর ভূ-অভ্যন্তরস্থ শিলাস্তরের আর্সেনিক যৌগ বায়ুর অক্সিজেনের সঙ্গে জারিত হয়ে সহজেই জলে দ্রবীভূত হয়। ফলে জল দূষণ ঘটে।

৭)কূপ ও নলকূপের স্থাপনের ব্যয় বৃদ্ধি-

অতিরিক্ত পরিমাণে ভৌমজল উত্তোলনের ফলে ভৌম জলস্তর অনেক নিচে নেমে যায়।ফলে ভৌমজল উত্তোলনের জন্য কূপ ও নলকূপকে আরো গভীরে প্রোথিত করতে হয়। তাই কূপ ও নলকূপের স্থাপনের ব্যয় বৃদ্ধি পায়।

৮)পানীয় জলের সংকট-

বর্তমানে মানুষের প্রয়োজনীয় পানীয় জলের একমাত্র নির্ভরযোগ্য উৎস হল ভৌমজল। কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে ভৌমজল উত্তোলনের ভূ-গর্ভে ভৌমজলের সঞ্চয় সীমিত হয়ে পড়ে। তাই অনেক সময় বিশেষত গ্রীষ্মকালে এদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কূপ ও নলকূপ শুকিয়ে যায়।ফলে পানীয় জলের সংকট সৃষ্টি হয়। কলকাতায় এই সমস্যা অত্যন্ত প্রকট।

Similar questions