দেশপ্রেম রচনা (ভারতবর্ষ) ২০ টি বাক্যে
Answers
Answer:
আমাদের দেশ আমাদের সকলের মাতৃতুল্য। এই দেশের জল, বাতাস, মাটি আমাদের জীবনকে করেছে পরিপূর্ণ। তাই দেশের প্রতি ভালোবাসা আমাদের জন্মগত। দেশকে ভালোবেসে স্বাধীনতা আন্দোলনে নিজের প্রাণ দিয়েছে কতশত বীর শহীদ। এই নিয়েই আমাদের আজকের উপস্থাপন স্বদেশপ্রেম রচনা (ভারতবর্ষ)।
“ও আমার দেশের মাটি, তোমার পরে ঠেকাই মাথা।
তোমাতে বিশ্বময়ীর তোমাতে বিশ্বমায়ের আঁচল পাতা।”
সূচি তালিকা
ভূমিকা:
দেশপ্রেমের স্বরূপ:
ভারতে দেশপ্রেম:
ভারতে দেশপ্রেমের পরিণাম:
দেশপ্রেমের সীমাবদ্ধতা:
উপসংহার:
ভূমিকা:
আমরা সবাই আমাদের দেশকে প্রাণের চাইতেও বেশি ভালোবাসি। এই দেশপ্রেম কথাটির সাথে জড়িয়ে রয়েছে দেশ শব্দটি।এখানে দেশ বলতে আমাদের স্বদেশ। স্বদেশের প্রতি আমাদের ভালোবাসা,আমাদের গর্ব,আমাদের আবেগ,আমাদের কর্তব্য সব কিছু মিলিয়ে আমাদের দেশপ্রেম।
ভারত আমাদের দেশ জননী।ভারতের মাটিতে আমাদের জন্ম।মায়ের সাথে সন্তানের যেমন নাড়ির যোগ,ঠিক সেভাবেই এই জন্মভূমি দেশের সাথে আমাদের নাড়ির বন্ধন।আমাদের সব সুখ দুঃখ, আশা আকাঙ্ক্ষার সাথে জড়িয়ে রয়েছে আমাদের জন্মভূমি দেশ।তাই আমরা স্বগর্বে বলতে পারি-
“এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি
সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি।”
দেশপ্রেমের স্বরূপ:
দেশের মাটি,মানুষ পরিবেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে জন্ম নেয় দেশপ্রেম।দেশপ্রেমের তাৎপর্য বুঝতে হলে দেশের যথার্থ স্বরূপ জানা প্রয়োজন।দেশ মানে গণ্ডিতে আবদ্ধ শুধু মৃত্তিকাময় একটি ভূমি খণ্ড নয়।সীমানা থাকলেও সীমানার কতগুলি প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য ও বৈশিষ্ট্য কে নিয়েই দেশের পরিধি।
বাংলা রচনা নিয়ে এসেছে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য একটি বিশেষ ই-বুক। একান্ত নির্ভরযোগ্য প্রবন্ধ রচনার উত্তরসহ সাজেশন। অতি সামান্য মূল্যে এই বইটি কিনতে এখানে ক্লিক করুন।
জনমানব শূন্য কোনো ভৌগলিক অঞ্চল একটি দেশ হয়ে উঠতে পারে না।মানুষ পশু পাখি গাছ সবকিছু নিয়ে দেশ।তাই প্রকৃত অর্থে দেশ প্রেম হল দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসা।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন – দেশ মৃন্ময় নয়,দেশ চিন্ময়।যার অর্থ দেশ চিত্তময়।আর এই চিত্তের অধিকারী মানুষের মনের সাথে মনের সংযোগ না থাকলে দেশ প্রেম সেখানে অর্থহীন।
ভারতে দেশপ্রেম:
প্রাচীন যুগে এমনকি মধ্য যুগেও মানুষের দেশ সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা ছিলনা তাই দেশ প্রেমের কোনো অস্তিত্ব ছিলনা।যে রাজার রাজত্বে মানুষ বসবাস করত সেখানের রাজার প্রতি আনুগত্যই ছিল প্রধান কথা।
আধুনিক সভ্যতা ও সমাজ ব্যাবস্থা গড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে উৎপত্তি হয়েছে দেশের।এখানে দেশ বলতে বোঝায় রাষ্ট্র।তাই দেশ প্রেম এক অর্থে দেশের রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রতি আনুগত্য।১৯৪৭ সালের পূর্বে ভারত সম্পূর্ণ পরাধীন ছিল,সে সময় ভারতবর্ষ ছিল ইংল্যান্ডের উপনিবেশ।এই ইংরেজ শাসন কালে ইংরেজদের নিষ্ঠুর শোষণ ,বঞ্চনা,অত্যাচার ও অবহেলা ভারতবাসীর মধ্যে একতাবোধের সৃষ্টি করেছিল।
সকল ভারতবাসীর কাম্য ছিল দেশের স্বাধীনতা।স্বাধীনতার প্রত্যাশা সকল ভারতবাসীকে এক ঐক্য সূত্রে বেঁধে দিয়েছিল। এখান থেকেই সকল ভারতবাসীর মনে দেশ প্রেমের জন্ম। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হাজার হাজার মুক্তি যোদ্ধার প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন শুধু মাত্র স্বাধীনতার জন্য।
ভারতে দেশপ্রেমের পরিণাম:
ইংরেজ কুবুদ্ধি ও ভেদনীতির ফল হিসেবে ভারতীয়দের মধ্যে ধর্মের বিরোধ ঘটে। ভারতীয় হিন্দু ও মুসলমান দের মধ্যে প্রবল বিরোধ দেখা যায়।ফলে দেশ প্রেম ও ধর্ম প্রেমের মধ্যে সংঘাত দেখা দেয়।কালক্রমে ভারতীয় উপমহাদেশ তিনটি ভিন্ন ভিন্ন রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়ে_ভারত,পাকিস্থান, ও বাংলাদেশ।
দেশের সীমানার গণ্ডির সাথে সাথে জনগণের দেশপ্রেম ও সেই সীমানায় আবদ্ধ হয়ে পড়ে। এক দেশের একক দেশ প্রেম তিনভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে।ভারত পাকিস্তানের যখনই কোনো বিরোধ বেঁধেছে তখন ভারতীয় দের দেশপ্রেম পাকিস্থানের বিরুদ্ধে ও পাকিস্থানি নাগরিকদের দেশপ্রেম ভারতের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে।এই ভাবেই দেশ প্রেম জাতিতে জাতিতে সংঘাত ও সংঘর্ষ কে অনিবার্চ করে তোলে।দেশ প্রেম এভাবেই বিশ্বমানবতা কে আঘাত করে।
দেশপ্রেমের সীমাবদ্ধতা:
নিজের দেশের প্রতি অশেষ ভালোবাসা আমাদের সবার থাকে।নিজের দেশকে ভালবাসি তার অর্থ এটা হতে পারেনা যে আমরা অন্য কোনো দেশকে ভালোবাসতে পারিনা।দেশ প্রেম সর্বদা জননির্ভর তাই অন্যদেশের নাগরিকদের ছোটো করে দেখা বাঞ্ছনীয় নয়।সকল দেশের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা ভালোবাসা রেখেই স্বদেশ প্রেমের বিকাশ হওয়া দরকার।
দেশপ্রেম কোনো নির্দিষ্ট জাতি বা ধর্মকে কেন্দ্র করে হতে পারে না।অনেক সময় দেশ প্রেমের নামে সৃষ্টি হয় উগ্র সাম্প্রদায়িক জটিলতা।ধর্মের নামে নিজের দেশের মানুষদের মধ্যেই সৃষ্টি হয় বিবাদ বিরোধ।সঠিক দেশ প্রেমের অর্থ কখনই এসব হতে পারেনা।
উপসংহার:
দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজের দেশের মানুষের জন্য কিছু না কিছু অবদান রাখা প্রত্যেক দেশপ্রেমী নাগরিকের দায়িত্ব।দেশ প্রেম আমাদের সকলের জীবনে অন্যতম মহৎ চেতনা।
যেদিন বিশ্বের সকল মানুষ উপলদ্ধি করবে স্বদেশ চেতনা বিশ্বাত্মবোধের প্রথম পদক্ষেপ ,সেদিন স্বদেশ অনুভূতিকে বিস্বানুভূতির দিকে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।সংবাদ মাধ্যমের মিথ্যাচার, ধর্মীয় বিবাদ, রাজনৈতিক সংকীর্ণতা এসব ধূলিসাৎ করে মানুষ দেশ প্রেমের সাথে বিস্বপ্রেমের মেলবন্ধন ঘটাতে সক্ষম হবে।
দেশপ্রেম বা স্বদেশপ্রেম রচনাটি পড়ে আপনার কেমন লাগলো আপনার ব্যাক্তিগত মতামত কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানান।আমরা সব সময় সচেষ্ট থাকি সবার থেকে সুন্দর ও আপনার মনের মতো করে একটি রচনা তুলে ধরার। এখানে নেই এমন রচনা পাওয়ার জন্য রচনাটির নাম কমেন্ট করে জানান।দ্রুততার সঙ্গে আমরা উক্ত রচনাটি যুক্ত করার চেষ্টা করবো।সম্পূর্ণ রচনাটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আরও পড়ুন:
আমাদের দেশ (ভারতবর্ষ)
জাতীয় পতাকা রচনা
সূত্র: ভারত – উইকিপিডিয়া, ভারতবর্ষ/ভারতবর্ষের ইতিহাস