তাৎক্ষনিৎ বক্তৃতার কিছু বিষয়
Answers
এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে বিজনেস ইনসাইডার।
২১ মিলিয়ন মানুষকে হত্যার দায়ে হিটলার ও তার অনুগত বাহিনী দায়ী। তবে এ অপকর্ম হিটলার একাই করেননি। এ জন্য প্রয়োজন হয়েছে বিশাল অনুগত বাহিনীর। আর এ বাহিনীকে অনুপ্রাণিত করেন হিটলার নানা বক্তৃতার মাধ্যমে।
জীবনকালে পাঁচ হাজারের বেশি বক্তৃতা দেন হিটলার। আর এসব বক্তৃতাতে তিনি শ্রোতাদের মোহাচ্ছন্ন করে ফেলতেন। তাদের তিনি কথা দিতেন যে, তার স্থাপিত সাম্রাজ্য হাজার বছর টিকে থাকবে।
এ বিষয়ে প্রফেসর ব্রুস লয়েবস যুক্তরাষ্ট্রের আইডাহো স্টেট ইউনিভার্সিটিতে দীর্ঘ ৪৬ বছর ধরে ক্লাস নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘তিনি (হিটলার) শিখেছিলেন কিভাবে কৌশলী বক্তা হওয়া যায়। যে কারণেই হোক, মানুষ তার বক্তৃতায় অনুপ্রাণিত হতো। ‘
তিনি আরো বলেন, ‘মানুষ তাকে স্বেচ্ছায় অনুসরণ করত। কারণ দারুণ অনুকূল অর্থনৈতিক সময়ে তার কাছে সঠিক উত্তর ছিল। ‘
১. হিটলারের রাজনৈতিক মতাদর্শ
প্রথম মহাযুদ্ধের পর জার্মানি অর্থনৈতিকভাবে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছিল। আর সে সময়েই জার্মানির রাজনৈতিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েছিলেন হিটলার। তার নাজি পার্টি ১৯২৪ সালের নির্বাচনে মাত্র ৩ ভাগ ভোট পেয়েছিল। কিন্তু তার আট বছর পর এ পার্টি জার্মানির প্রধান পার্টিতে পরিণত হয়।
২. লেখা বক্তৃতা
হিটলারের প্রোপাগান্ডা মন্ত্রী জোসেফ গোয়েবেলস তার ডায়েরিতে লিখেছেন হিটলার তার নিজের বক্তৃতা নিজেই লিখতেন। এরপর তিনি নিজেই পাঁচবার পর্যন্ত তা সংশোধন করতেন। হিটলার প্রায়ই অনেক রাত পর্যন্ত তার সেক্রেটারিদের নিয়ে বক্তৃতা লেখার কাজ করতেন। এরপর সতর্কভাবে সেগুলো সংশোধন করা হতো। তিনি অন্য কারো লেখা বক্তৃতার ওপর নির্ভর করতেন না।
৩. হিটলারের কণ্ঠস্বর ছিল সম্মোহনকর
হিটলার মানুষকে তার কণ্ঠস্বর দিয়ে আকৃষ্ট করতেন। তার কণ্ঠ ছিল জোরালো এবং আকর্ষণীয়। বহু মানুষ সম্মোহিত হওয়ার মতো করেই শুনতেন তার বক্তব্য।
৪. হাতের জাদু
হিটলার শুধু কণ্ঠ কিংবা ভালোভাবে লেখা বক্তৃতা দিয়েই মানুষকে সম্মোহিত করতেন না, তার হাতও ব্যবহার করতেন তিনি। বিশেষ করে হাতের বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে তিনি পারদর্শী ছিলেন। এ কাজটিতে দক্ষতা অর্জনের জন্য হিটলার দীর্ঘদিন অনুশীলন করেছিলেন। ১৯২৫ সালে হিটলারের ফটোগ্রাফার তার আয়নার সামনে অনুশীলনের বেশ কিছু ছবি তুলেছেন, যা হিটলার পরে তাকে নষ্ট করে দিতে বলেছিলেন।
হিটলারের একটি বক্তব্যের ভিডিও দেখুন (ইংরেজি সাবটাইটেলসহ)
ভিডিও
Answer is given below.
Explanation:
Given,
তাৎক্ষনিৎ বক্তৃতার কিছু বিষয়..?
১। অনুশীলনের মাধ্যমে প্রস্তুতি গ্রহণ:
কোন বক্তব্য দেওয়ার আগে প্রায় সবাই অস্থির বোধ করে। এই অস্থিরতা দূর করার জন্য বারবার অনুশীলন করতে হবে। তোমার নোটগুলো বারবার পড়ে দেখো যে সব ঠিক আছে কিনা। যখন তোমার মনে হবে যে তোমার বক্তব্য ঠিক হয়েছে, তখন বারবার অনুশীলন করতে থাকো। নিজের বক্তব্য ভিডিও করো অথবা কোন বন্ধুকে তোমার বক্তব্যের সমালোচনা করতে বলো।
২। দর্শক বুঝে বক্তব্য দেওয়া:
তোমার বক্তব্য তৈরি করার আগে কাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিচ্ছো, সে ব্যাপারে জেনে নাও। ফলে তুমি কোন ধরণের শব্দ বলবে, কী ধরণের তথ্য দেবে, বক্তব্যের ধরণ কেমন হবে, সে সম্বন্ধে একটা ভালো ধারণা পাবে।
৩। বক্তব্যের বিষয়বস্তু সাজিয়ে নেওয়া:
নিজের বক্তব্যের জন্য কাঠামো দাঁড় করাও। বক্তব্যের ধাপগুলো লিখে রাখো। প্রথমেই বিষয়টির নাম লিখে রাখো, তারপর বিষয়টির কোন কোন দিক নিয়ে তুমি কথা বলতে চাও, তা লিখে ফেলো। তোমার শ্রোতার মনোযোগ বক্তব্যের প্রথম ৩০ সেকেন্ডেই আকর্ষণ করার দিকে জোর দাও।
৪। দেখে বক্তব্য দেওয়া পরিহার করা:
কাগজ অথবা স্লাইড দেখে বক্তব্য দেওয়া দর্শকের সাথে তোমার সংযোগে ব্যাঘাত ঘটায়। দর্শকের দিকে তাকিয়ে কথা বললে তোমার এবং তোমার বক্তব্যের দিকেই সবার নজর থাকবে। বক্তব্যের কাঠামো তোমাকে বিষয়বস্তু মনে রাখতে সাহায্য করতে পারে।
৫। স্বরভঙ্গির যথাযথ ব্যবহার:
বক্তব্যে কী বলছো, তার সাথে সাথে কীভাবে বলছো, সেটাও সমান গুরুত্ব বহন করে। কথা বলার সময় গলার স্বর কখন ওঠাতে হবে এবং কখন নামাতে হবে, সে ব্যাপারে ওয়াকিবহাল থাকতে হবে। একইভাবে কথা বলে গেলে দর্শক বক্তব্য শোনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এজন্য গলার স্বরে তারতম্য এনে দর্শকের আগ্রহ ধরে রাখতে হবে। এর ফলে তোমার আইডিয়াগুলো দর্শক খুব সহজেই বুঝতে পারবে।
"তোমার বক্তব্যের মধ্যে মজাদার কোন কৌতুক থাকলে দর্শক অবশ্যই আকৃষ্ট হবে"
৬। দর্শকের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া:
দর্শকের দিকে নজর রাখা গুরুত্বপূর্ণ। তাদের প্রতিক্রিয়া লক্ষ করো, প্রয়োজন হলে তোমার বক্তব্যে কিছু পরিবর্তন আনো। একদম গৎবাঁধা বক্তব্য দিলে তুমি সবচেয়ে আগ্রহী শ্রোতারও মনোযোগ পাবে না।
৭। নিজের ব্যক্তিত্বকে বক্তব্যের মাঝে ফুটিয়ে তোলো:
নিজের মত করেই সবসময় কথা বলবে, কখনোই একদম গাছের মত শক্ত হয়ে গিয়ে শুধু মুখ নাড়াবে না। তুমি যখন সাবলীলভাবে কথা বলবে, তখন শ্রোতারা তোমর কথা বিশ্বাস করবে। তখনই তোমার বক্তব্যের উদ্দেশ্য সফল হবে।
৮। গল্প, কৌতুকের মাধ্যমে শ্রোতাকে আকৃষ্ট করা:
তোমার বক্তব্যের মধ্যে মজাদার কোন কৌতুক থাকলে দর্শক অবশ্যই আকৃষ্ট হবে। তাছাড়াও দর্শক কোন বক্তৃতার মাঝে গল্প শুনতেও পছন্দ করে। এজন্য বক্তব্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোন গল্প বলা যেতে পারে।
৯। শুরুতেই মনোযোগ আকর্ষণ করা:
দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করার জন্য গতানুগতিকভাবে বক্তব্য শুরু না করে কোন চমকপ্রদ তথ্য অথবা অসাধারণ উক্তি দিয়ে বক্তব্য শুরু করা যেতে পারে। বক্তব্য শেষ করার সময় পুরো বক্তব্যের সারমর্ম এবং শক্তিশালী বক্তব্য দিয়ে শেষ করতে হবে যা তোমার দর্শক অবশ্যই মনে রাখবে।
১০। প্রযুক্তি যথাযথভাবে ব্যবহার করা:
অডিও/ভিডিওর আধিক্য দর্শকের সাথে তোমার সম্পৃক্ততা কমিয়ে দেয়। এজন্য এগুলো যথাযথভাবে ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ। এমনভাবে অডিও/ভিডিও তোমার বক্তব্যে ব্যবহার করতে হবে যেন তোমার বক্তব্য বাধাগ্রস্ত না হয়, বরং এগুলোর উপস্থিতিতে তোমার বক্তব্য আরও শাণিত হয়।