Social Sciences, asked by jhumasarkarbala1982, 7 months ago

DR. sarba palli radha krishnan life story in paragraph in bengali. please help me.



ake mi in 700 word, in bengali ​

Answers

Answered by ishikamaju284
1

Answer:

:একদিকে শিক্ষক দিবস উদ্‌যাপন। অন্যদিকে উত্তপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, নিরন্তর শিক্ষক নিগ্রহ। ইতিহাস ছুঁয়ে বর্তমানে হাঁটলেন সায়ন্তন দাস

বৈদিক মন্ত্রে গুরুকে ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরের সমতুল্য রূপে প্রণাম জানানো হয়েছে। পুরাণ থেকে মহাকাব্য— কান পাতলেই শোনা যায় গুরু-শিষ্যের নানা আখ্যান। কোথাও গুরুর প্রতি শিষ্যের অখণ্ড আনুগত্য-আত্মসমর্পণ, গুরুবাক্য পালনে আপন জীবন বাজি রাখা। কোথাও শিষ্যকে গড়ে তুলতে গুরুর জীবনপণ সাধনা। ভারতের সনাতন শিক্ষাব্যবস্থায় গুরু-শিষ্য সম্পর্ক এক অদ্ভুত  

আন্তরিক বিষয়।

আধুনিক ভারতেও অনেকটা সেই পথেই এগিয়েছিল শিক্ষক-ছাত্র সম্পর্ক। এক অচ্ছেদ্য বন্ধন। শ্রদ্ধার, ভালবাসার, প্রেরণার। বন্ধুত্বেরও। তারই আনুষ্ঠানিক উদ্‌যাপন শিক্ষক দিবস। সে দিবস এক মহান শিক্ষক ও দার্শনিকের জন্মদিনে নির্দিষ্ট। যিনি মনে করতেন, স্বাধীন এবং সৃষ্টিশীল মানুষ গঠনই শিক্ষার অন্তিম উদ্দেশ্য, যে মানুষ যাবতীয় ঐতিহাসিক ঘটনা এবং প্রকৃতির নানা ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় ঠিকভাবে সাড়া দিতে পারবেন।

১৯২৮ সালের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। সাইমন কমিশনের প্রতিবাদে পড়ুয়ারা উত্তপ্ত। উপাচার্য পুলিশ ডাকলেন। এক শিক্ষক স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন যে, পুলিশ ডাকা ভুল হয়েছে। সেই শিক্ষক আর কেউ নন, সর্বেপল্লি রাধাকৃষ্ণন। এরপরেই চ্যান্সেলরের সরকারি অনুদান বন্ধের হুমকি। প্রতিবাদে আরও সোচ্চার হলেন তিনি। সারা জীবন এভাবেই তিনি ছাত্রদের আগলে রেখেছিলেন। চেয়েছিলেন প্রকৃত শিক্ষা দিতে।

এবারও বেশ আড়ম্বরেই পালিত হল শিক্ষক দিবস। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ও তার বাইরেও। শিক্ষক-ছাত্র সম্পর্কের উৎসবের মধ্যেই  ছাত্র এবং অভিভাবকদের দৌরাত্ম্যে উত্তর কলকাতার একটি কলেজ এবং একটি স্কুল উত্তপ্ত হয়ে উঠল। মাঝেমাঝেই চোখে পড়ছে পড়ুয়াদের হাতে শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনা। লক্ষ্যভ্রষ্ট ছাত্র রাজনীতির জঙ্গিপনাও প্রকাশ পাচ্ছে মাঝেমধ্যে। এর একটি কারণ যদি রাষ্ট্রজীবন ও সমাজজীবনের সার্বিক অসহিষ্ণুতা হয়, আরেক কারণ তবে রাজনৈতিক দলগুলির ঠিক পথে ছাত্রদের পরিচালনার ব্যর্থতা। তবে সবচেয়ে বড় কারণ সম্ভবত শিক্ষকদের ব্যর্থতা।

শিক্ষক থেকে গুরুতে উত্তীর্ণ করতে পেরেছি অামরা নিজেদের? যিনি শ্রেণিকক্ষের বাইরেও নিজের ব্যক্তিত্ব, চারিত্রিক মাধুর্য দিয়ে পড়ুয়াদের চিনিয়ে দেবেন জীবনের ঠিক পথ? সব দেশেই ছাত্র রাজনীতির গৌরবজনক অধ্যায় আছে। আমরা সেই গৌরব ধরে রাখতে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি কি? অথচ, এই বাংলাতেই একসময় এমন সব শিক্ষক ছিলেন, যাঁরা পেরেছিলেন তাঁদের ব্যক্তিত্বের জাদুস্পর্শে ছাত্রদের খাঁটি সোনায় পরিণত করতে।১৮২৪ সাল। কলেজ স্কোয়্যারে নির্মিত হল হিন্দু কলেজের নিজস্ব ভবন। ঠিক তার বছরচারেক পরেই কলেজের যেন প্রাণপ্রতিষ্ঠা হল ! ছাত্রেরা মেতে উঠল নতুন যৌবনের উচ্ছ্বাসে। যুক্তিবাদ, বিজ্ঞানমনস্কতার সঙ্গে মিশে গেল দেশপ্রেম। যার মূলে এক ফিরিঙ্গি শিক্ষকের অদ্ভুত আকর্ষণশক্তি। হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও নামের সেই চুম্বকে তখন আকৃষ্ট হচ্ছে সকল শ্রেণির ছাত্রই। শুরু হল ছুটির পর নানা বিষয়ে আলোচনা। শিক্ষকের অমায়িক বন্ধুসুলভ ব্যবহারে পড়ুয়ারাও শুরু করল স্বাধীন তর্কবিতর্ক। একে একে তৈরি হলেন রাধানাথ শিকদার, রামগোপাল ঘোষ, রামতনু লাহিড়ী, দক্ষিণারঞ্জন ও কৃষ্ণমোহনের মতো ডিরোজিয়ানেরা। বাংলায় এল যুক্তিবাদ। পুঁথিগত বিদ্যায় আবদ্ধ না-থেকে নিজের পথে এগিয়েছিলেন সেই শিক্ষক। ছাত্রদের মধ্যে জাগরিত করেছিলেন সত্যের প্রতি অবিচল নিষ্ঠা, অন্যায়-অসত্যের প্রতি অপরিসীম ঘৃণা এবং দেশপ্রেম।

ছাত্রদের মধ্যে দেশপ্রেম সঞ্চারিত করেছিলেন র‌্যাভেনশ কলেজিয়েট স্কুলের প্রধানশিক্ষক বাবু বেণীমাধব দাসও। শ্রেণিকক্ষে ও তার বাইরে তাঁকে পেতে সব ছাত্রই উন্মুখ। তিনি তাদের নিয়ে কখনও সূর্যোদয়, কখনও-বা নদীর ধারে সূর্যাস্তের সাক্ষী। তার মধ্যেই গল্পের ছলে দেশ-বিদেশের ইতিহাস, প্রকৃতির কাছে নিজেকে সঁপে দেওয়ার শিক্ষা। বারো বছরের এক স্বভাবলাজুক, মুখচোরা বালকের ভবিষ্যতে দেশনায়ক হয়ে ওঠার প্রক্রিয়ার সেই শুরু। ছাত্রটি সুভাষচন্দ্র বসু। অনেক পরে যিনি ‘ভারত পথিক’ গ্রন্থে লিখবেন— ‘তিনি আমার মনে স্থায়ী একটা রেখা অঙ্কিত করে দিয়েছিলেন’।

ঔপনিবেশিক শিক্ষারীতির বিকল্পে প্রকৃতির উদার সাহচর্যে শিক্ষাদানের কথা ভেবেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। ছাঁচে ঢালা যান্ত্রিক পাঠ্যক্রমের বদলে তিনি চেয়েছিলেন পড়ুয়ার ব্যক্তিগত রুচি ও মানসিকতা অনুযায়ী পাঠদানের ব্যবস্থা। তাঁর ভাবনা অনুসরণ করেই বিশ্বভারতীতে ক্ষিতিমোহন সেন, জগদানন্দ রায়, সতীশচন্দ্র রায় প্রমুখেরা হয়ে উঠলেন পড়ুয়াদের প্রেরণা, জীবনপথের প্রদর্শক।  

এই গৌরবময় অতীত অার কোনও সফল উত্তরাধিকার সৃষ্টি করতে পারছে না এখন। তাই এক অদ্ভুত আঁধারে ক্রমশ নিমজ্জিত হচ্ছে  

আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা।

 

তবুও কোথাও কোথাও জ্বলে উঠছে আলো। লখনউয়ের বস্তি অঞ্চলে সাইকেলে বোর্ড লাগিয়ে রোজ ৬০ কিলোমিটার ঘোরেন বিজ্ঞানের স্নাতক আদিত্য কুমার। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা তাঁকে ঘিরে ধরলেই শুরু হয়ে যায় স্কুল। দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা এই চলমান স্কুলে হাজারেরও বেশি ছাত্রছাত্রী শিক্ষিত হয়েছে। নয়া দিল্লিতে মেট্রোর ব্রিজের তলায় রোজ ২০০ পড়ুয়াকে শিক্ষা দিচ্ছেন রাজেশকুমার শর্মা। বাংলাতেও রানিপুরের গ্রামে বাড়ির বারান্দায় আছে খুরশিদের পাঠশালা। মুর্শিদাবাদে মাত্র ১৬ বছর বয়সে নিজের তৈরি স্কুলের প্রধানশিক্ষক বাবর আলি। এখন যেখানে ছাত্রসংখ্যা ৩০০-র বেশি ! চরম দারিদ্রের মধ্যেও কীভাবে শিক্ষালাভ করা যায়, এঁরা সকলেই ছাত্রছাত্রীদের তা শেখাচ্ছেন। আন্তরিক প্রয়াসে গড়ে দিচ্ছেন তাদের ভাল-মন্দের বোধ, বিবেক, চেতনা।

আছেন আনন্দ কুমার, গগনদীপ সিংহ, সুধাংশু বিশ্বাসেরাও। হয়তো এইসব দ্বীপগুলিই একদিন দীপাবলি ঘটাবে এই দেশে !

Similar questions