টীকা লেখ:
মিড-ডে-মিল (in Bengali)
Answers
Answer:
-স্কুলের মধ্যাহ্ন ভোজ -
মিড–ডে মিল একটি বহুল আলোচিত বিষয়, যাঁরা মিড–ডে মিল কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত শুধু তাঁদের কাছেই নয়, সমগ্র পশ্চিমবাংলার মানুষের কাছেই। ভূমিসংস্কার আন্দোলনের পরবর্তী পর্যায়ে অন্য কোনও সরকারি কর্মসূচি এত আলোচিত ও সমালোচিত হয়নি। ভারত সরকার ১৯৯৫ সালে প্রথম শিক্ষায় জাতীয় পুষ্টি সহায়তা প্রকল্প অর্থাৎ মিড–ডে মিল প্রকল্পটি চালু করেন। ভারত সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী এর উদ্দেশ্য হল বিদ্যালয়ে ভর্তিকরণ, শিশুদের বিদ্যালয়ে ধরে রাখা এবং তাদের উপস্থিতি বাড়িয়ে প্রাথমিক শিক্ষাকে সর্বজনীন করে তোলা এবং একই সঙ্গে তাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানো। কিন্তু রান্না করা খাবার দেওয়ার পরিবর্তে বেশির ভাগ রাজ্যই মাসে প্রত্যেক শিশুকে ৩ কিলোগ্রাম করে চাল বা গম দিত। পশ্চিমবঙ্গ সরকার অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ২০০৩ সালে মিড–ডে মিল চালু করেন। প্রতীচী ট্রাস্ট এই প্রকল্প রূপায়ণের পক্ষে প্রথম থেকেই বলে আসছে।
মুর্শিদাবাদ জেলার ৬৫, কর্ণসুবর্ণ সুকান্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কৃষ্ণেন্দু ঘোষের মতে :
‘যখন আল ওঠে, ধানখেত ছেড়ে ছেড়ে, ধুলো মিলন, পায়ে পায়ে দৌড়, বাঁশবাগানের মর্মরে পাতা মাড়িয়ে যখন গোল্লাছুট, বাতাসের আগে এসে সেখানে উপস্থিত, সমস্ত মুগ্ধতার পাশে এসে উপস্থিত, ইস্কুলের বাড়ি। পালিয়ে যেতে হত। শ্রীতনকে পালিয়ে যেতে হত। কিন্তু স্কুলের খাবার যে খেতে হবে।’
একটি শিশু যে বিদ্যালয় থেকে পালিয়ে যেত, সে আটকে গেল শুধুই স্কুলের খাবার খাওয়ার জন্য। আমাদের শিক্ষক কর্মশালাগুলি থেকে যে ৩৪৮টি লেখা পাওয়া গেছে, তার মধ্যে ১৬৬ জন (৪৮ শতাংশ) শিক্ষকের লেখার মধ্যে মিড–ডে মিল বিষয়টির কথা উঠে এসেছে। কৃষ্ণেন্দু ঘোষ-এর মতো শিক্ষক অনেকেই আছেন যাঁরা মিড–ডে মিলের উপযোগিতা নিয়ে মুখর। ১৬৬ জন শিক্ষকের মধ্যে ৯৪ জন (৫৭ শতাংশ) শিক্ষক কোনও না কোন ভাবে মিড–ডে মিলের উপযোগিতার কথা বলেছেন। এঁরই মধ্যে এক জন শিক্ষক মুর্শিদাবাদ জেলার ২১ নং হরিডোবা নতুনপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক গিয়াসউদ্দিন মণ্ডল। তিনি একটি তুলনামূলক পরিস্থিতির উদাহরণ দিয়ে মিড–ডে মিল কতখানি উপযোগী তা বুঝিয়েছেন :
‘একটি সময় দেখতাম ছেলেমেয়েরা প্রায়ই বলতো, ‘বাড়ি যাব স্যার’। তার নাকি পেট লাগছে। পেটের আর দোষ কী? আসলে ছেলেটা না খেয়ে অভুক্ত অবস্থায় বিদ্যালয়ে এসেছে। মিড–ডে মিল এসে এই সমস্যা নেই।’