বিষ্ণুপুর গৃহশ্রী শিক্ষায়তন ফর গার্লস - দশম শ্রেণি (SEPTEM
বাংলা
কিভিটি টাস্ক - 5
অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান” – কবিতায় যুদ্ধ বিরােধী মনােভাবের যে প্রকাশ ঘটেছে তা নিজের ভাষায় লেখা
এমন মন্তব্যের কারন কি? শ্রোতাকে বক্তা কি বলে আশ্বস্ত করেন?
Answers
Answer:
can you tell me which language is this
1. অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতায় মূল বক্তব্য নিজের ভাষায় লেখ ? অথবা, যুদ্ধবিরােধী কবিতা হিসাবে অন্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতার বক্তব্য লেখাে?
উত্তর : মূল বক্তব্য : জয় গােস্বামী অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতায় অশ্ব শক্তি এবং পেশি শক্তির বিরুদ্ধে মানুষের সুস্থ রুচি ও নান্দনিকতার প্রতিরােধ গড়ে তােলার কথা বলেছেন। গানকে অবলম্বন করে কবি যে অমিত শক্তির অধিকারী হয়েছে যা। তাকে হাত বাড়িয়ে বুলেট প্রতিহত করার প্রভাস দিয়েছেন। গান তাকে এক আশ্চর্য ঐক্যবােধে বেঁধেছে। তাই তার হাতে হাত মিলিয়েছে। হাজার হাজার মানুষ পায়ে পা মিলিয়েছে সহস্র পা। দীপ্ত ভঙ্গিতে কবি বলতে পেরেছেন—“অস্ত্র ফ্যালাে অস্ত্র রাখাে পায়ে।” পৃথিবীর ইতিহাসের অস্ত্র কখন শেষ কথা বলেনি। জয়ী হয়েছে মানুষের শুভ বুদ্ধি, একতা এসবের প্রতীক। গান কবিকে মানুষের সঙ্গে মিলিয়েছেন। রক্ত মুছিয়ে সুন্দরের মুখােমুখি দাঁড় করিয়েছে। চারপাশে। হিংসা এবং রাজ্যের মধ্যে গান সুন্দরের আরাধনা করে। গানের নানা রূপ বিষয়ে তার সুরের নানা বৈচিত্র্য কখনও সে হয়ে ওঠে ঋষিবালকের মতাে নিস্পাপ, কখনাে তার স্পর্শ লেগে থাকে কোকিলের মােহময় সুরেলা সৃষ্টি। যুদ্ধরাজ মানুষ অস্ত্র হাতে মনুষ্যত্বের বিপক্ষে গিয়ে যখন দাঁড়ায়, তখন কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই গানই মানুষের হাত ধরে থাকে। তাকিয়ে থাকে অস্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রেরণা, শক্তি এবং সাহস। সেই গানের বর্ম পরে কবি অস্ত্র প্রতিহত করেন অবহেলায়, আর অন্যদেরকেও নিয়ে যেতে চান সেই গানের কাছাকাছি “তােমায় নিয়ে বেড়াব গান নদীতে, দেশ গাঁয়ে।”
2। 'অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতায় কবির যুদ্ধবিরোধী মানসিকতার পরিচয় দাও।
আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি জয় গোস্বামীর লেখা অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতায় ধ্বনিত হয়েছে আধুনিক বিশ্বের উন্মত্ত হিংসার বিরুদ্ধে এক অভিনব প্রতিবাদ।
ক্ষমতার লোভে অন্ধ হয়ে গোটা পৃথিবীর রাষ্ট্রশক্তিগুলি আজ ছুটে চলেছে এক অদ্ভুত অবক্ষয়ের দিকে। অস্ত্রের প্রতিযোগিতা, হিংসার বেসাতি আর যুদ্ধের হুংকার বিপন্ন করছে শান্তিকামী সাধারণ মানুষের জীবনকে। এইসব সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি হয়েই কবির কণ্ঠ থেকে উঠে এসেছে এক পরম আহ্বান: "অস্ত্র ফেলো, অস্ত্র রাখো গানের দুটি পায়ে।" গান হল সংবেদনশীলতা ও সৌন্দর্যের প্রতীক। একজন স্রষ্টা হিসেবে নিজের সুললিত ছন্দোবদ্ধ কবিতার মধ্যে দিয়ে মানব হৃদয়কে সুবাসিত করাই কবির কাজ। এই দিক দিয়ে একজন গায়কের সঙ্গে কবির কোনো পার্থক্য নেই; পার্থক্য নেই গানের সঙ্গে কবিতার। অহিংসায় বিশ্বাসী কবি তাঁর গানের ডালি নিয়ে হিংসার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছেন। নিজের সুললিত সৃষ্টির দ্বারা তিনি মুছে দিতে চান হিংসার ক্ষত। লড়াই অসম জেনেও কবি এগিয়ে আসেন। বুলেটের বিরুদ্ধে বুলেট নয়, হিংসার বিরুদ্ধে হিংসা নয়, তিনি লড়ছেন নিজের কবিতার অস্ত্রে। মানব সমাজকে তিনি অহিংসার মন্ত্রে দীক্ষা দিতে ব্রতী হয়েছেন। এই কবিতার ছত্রে ছত্রে রয়েছে হিংসা ত্যাগ করে সৌন্দর্যের প্রতিরূপ সঙ্গীতের কাছে আশ্রয় নেওয়ার বার্তা। তাই মোটের উপর সমগ্র কবিতাটিকেই একটি সার্থক যুদ্ধবিরোধী বা হিংসাবিরোধী কবিতা বলা যায়।