ব্রিটিশ রেসিডেন্ট এর কাজ কি ছিল ??? বিস্তার ভাবে বর্ণনা করো।
please give me the answer.
Answers
Answer:
ব্রিটিশ রাজ্যের ইতিহাস বলতে ভারতীয় উপমহাদেশে ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী ব্রিটিশ শাসনের সময়কালকে বোঝায়। এই শাসনব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দে যখন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন ব্রিটিশ রাজ বা রাণী ভিক্টোরিয়ার কাছে হস্তান্তর করা হয়। যাঁকে ১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দে 'এমপ্রেস অফ ইন্ডিয়া' বা 'ভারতের সম্রাজ্ঞী' বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। এই শাসন ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল যখন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ প্রদেশগুলিকে ভাগ করে দুটি অধিরাজ্য বা ডমিনিয়ন সৃষ্টি করা হয়। এই দুটি ছিল যথাক্রমে ভারত অধিরাজ্য ও পাকিস্তান অধিরাজ্য। দেশীয় রাজ্যগুলিকে এই দুটি দেশের মধ্যে একটিকে বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। এই অধিরাজ্য দুটি পরবর্তীকালে ভারতীয় প্রজাতন্ত্র এবং ইসলামি প্রজাতন্ত্রী পাকিস্তান-এ পরিণত হয়। পাকিস্তানের পূর্ব অংশ বা পূর্ব পাকিস্তান ১৯৭১ সালে স্বাধীন রাষ্ট্র গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ-এ পরিণত হয়। ভারত সাম্রাজ্যের পূর্বদিকের বার্মা প্রদেশটিকে ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে একটি আলাদা উপনিবেশে পরিণত করা হয়। বার্মা ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে স্বাধীনতা লাভ করে।
Answer:
ব্রিটিশ শক্তি ভারতে ২০০ বছর শাসন চালিয়েছিল। এই দুশো বছরের শাসন কালে ইংল্যান্ড থেকে প্রচুর কর্মচারী এদেশে আসতে শুরু করেন। প্রথমে যখন কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠা ছিলো তখন কোম্পানির প্রচুর বেতন প্রাপ্ত কর্মচারী এদেশে আসেন এবং এখানকার অধিবাসীদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করে এদেশের সঙ্গে মিশে যান।পরে রানী ভিক্টোরিয়া যখন কোম্পানির শাসন শেষ করে ভারত কে সম্পূর্ণ ভাবে ব্রিটিশ সরকারের অধীনে নিয়ে আসেন তখন ইংরেজ সেনা ও ব্রিটিশ সরকারের অধীনস্ত কর্মচারীও এদেশে আসতে শুরু করেন জলের স্রোতের মতন। এরা এদেশে এসে মূলত ইংরেজ সরকারের হয়েই কাজকর্ম করতো কিন্তু কোথাও যেন এদেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং জীবনযাপন প্রভাব ফেলতো তাদের মননের উপর।সমাজের কিছু প্রাচীন প্রথা, কুসংস্কার নাড়া দিতো তাদের মনকে, ফলে সতিদাহ প্রথা, বিধবা বিবাহ এর মতো আইন তাঁরা কঠোর হাতে দমন করেছিলো। যদিও অধিকাংশ ব্রিটিশরাই ভারতীয়দের নেটিভ বলে ডাকতো। ভালো রেস্টুরেন্ট,বারে ভারতীয় দের প্রবেশ সম্পূর্ণ নীষিদ্ধ ছিলো..কম যোগ্যতা নিয়ে বহু ব্রিটিশ কর্মচারী সরকারি উচ্চ পদে নিযুক্ত থাকতো। সেই একই যোগ্যতা নিয়ে ভারতীয় দের স্থান হতো অনেক নীচে। অবশ্য আরেকটা নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছিলো ব্রিটিশ রেসিডেন্টরা ভারতীয় দের কাছে। তাঁরা পাশ্চাত্য শিক্ষা, সাহিত্যের প্রতি টান অনুভব করে তাদের আচার, আচরণ, কথাবার্তা দেখে, বিজ্ঞান কে জানতে শেখে, বুঝতে শেখে , ব্রিটিশ দের মতো সব কিছু যুক্তি, তর্ক দিয়ে বিচার করার ক্ষমতা আয়ত্ত করার চেষ্টা করতে থাকে। সমগ্র ইউরোপ জুড়ে যে নবজাগরণের ঢেউ ভেসে বেড়াচ্ছিলো। দেরি হলেও সেই ঢেউ এসে পৌঁছায় ভারতেও, যা পরবর্তী কালে ভারত কে ঔপনিবেশিকতা মুক্ত স্বাধীন ভারতের জন্ম দিতে সহায়ক করে।